স্কুলমাঠে সড়ক নির্মাণসামগ্রী, বন্ধ খেলাধুলা
বাংলাদেশ

স্কুলমাঠে সড়ক নির্মাণসামগ্রী, বন্ধ খেলাধুলা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যুদন্দদী ইউনিয়নের কুমারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে সড়ক সংস্কার কাজের সামগ্রী রাখা হয়েছে। গত দুই মাস ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় মাঠটি দখলে রেখেছেন এক ঠিকাদার। ফলে ওই বিদ্যালয়ের মাঠে কোমলমতি শিশুশিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না।

জানা গেছে, উপজেলার চণ্ডিবর্দী থেকে কালীনগর বাজার পর্যন্ত ১১ দশমিক ৮ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ চলছে। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি করছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পুরো মাঠে বিপুল পরিমাণ ইট-সুরকি ও বালু জমা করে রাখা হয়েছে। স্কুল ভবনের পাশে রাখা হয়েছে ভারী ভারী যন্ত্র। শিক্ষকরা জানান, খোয়া-বালু মিশ্রণের সময় এসব যন্ত্রের বিকট শব্দে আর ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আশপাশের বাসিন্দারা।

এই মাঠেই বিটুমিন গলাতে ও পাথর-বালু মিশ্রণের জন্য প্ল্যান্ট মেশিনও রাখা হয়েছে। এখানে বিটুমিন গলানো হলে কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হবে বিদ্যালয় এলাকা। এতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাই মুশকিল হয়ে পড়বে বলে জানান শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠটি দখল হয়ে আছে খোয়া-বালু আর বড় বড় যন্ত্রে। এমনকি স্কুল ভবনের বারান্দায় পর্যন্ত মাঝে মাঝে মালামাল রাখছেন ঠিকাদারের লোকজন। ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা দূরের কথা, স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না। মাঠের এমন অবস্থায় অনেক শিশুশিক্ষার্থী ক্লাসে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।’

মাঠে সড়কের সামগ্রী রাখার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানান প্রধান শিক্ষক। তবে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঠিকাদারকে মাঠ দখলের সুযোগ করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারকে বলার পরেও মাঠ ছাড়ছেন না তারা। মাঠ থেকে সড়কের সামগ্রী দ্রুত সরানোর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

বিরক্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা

এ ব্যাপারে জানতে ঠিকাদার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ঠিকাদারের ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘মাঠটা পুরোপুরি বিদ্যালয়ের না। মাঠের কিছু অংশ স্থানীয়দের। তাই স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মালামাল রাখা হয়েছে।’

কোথায় মালামাল রাখবেন, এটা ঠিকাদারের ব্যাপার বলে জানান সড়ক সংস্কার কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা উপপ্রকৌশলী কাইয়ুম হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ বুঝে পেলেই হলো।’

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী জানান, বিদ্যালয় মাঠ দখলের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে ওই মাঠ থেকে মালামাল অপসারণের ব্যবস্থা নেবেন।  

Source link

Related posts

সাতক্ষীরায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু

News Desk

৩ মানবতাবিরোধী অপরাধীর মামলার নথি জাতীয় আর্কাইভসে

News Desk

জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এখন সময়ের দাবি: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

News Desk

Leave a Comment