Image default
অন্যান্য

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ অসময়ে ধেয়ে আসছে

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আগামীকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশে আঘাত করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে উপকূলের ১৯ জেলা। বিপর্যয় মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার আশ্রয়কেন্দ্র। এদিকে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত মে ও নভেম্বর মাসে দেশে ঘূর্ণিঝড় আঘাত করে থাকে। কিন্তু এবার অক্টোবরেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের। গত চার দশকে মোট ২৮টি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে দেশে। এর মধ্যে মে ও নভেম্বর মাসে হয়েছে ২৫টি আর অক্টোবরে হয়েছে মাত্র তিনটি। সে হিসাবে অসময়েই আঘাত হানতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত ২০ অক্টোবর সৃষ্ট লঘুচাপটি গতকাল রবিবার দুপুরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। গভীর নিম্নচাপটি গতকাল রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়েছে। আজ সোমবার রাতের পর থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের ১৯টি জেলায় আঘাত হানতে পারে ‘সিত্রাং’।

গতকাল রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরো সামান্য উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে পরিণত হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার উপকূল থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, ‘সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোকে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়ালি মিটিং হয়েছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি গ্রহণ ও সতর্কবার্তা প্রচারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা পর্যায়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখতে বলেছি। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া মানুষের জন্য শুকনা খাবারের প্যাকেট প্রস্তুত করা ছাড়াও চিকিৎসা সুবিধা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ’

ফিরিয়ে আনা হয়েছে সেন্ট মার্টিনের পর্যটক : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আজ সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজসহ নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

Related posts

‘ব্রাজিল ফুটবলারদের ডিএনএতেই তো আক্রমণ’

News Desk

জাল টাকার ব্যবসা, পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট

News Desk

উন্মুক্ত পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠনোর আহ্বান বিসিএসএমের

News Desk

Leave a Comment