Image default
অন্যান্য

আলিশান বাড়ির ‘ভূমিহীন’ মালিক ও একালের উপেনেরা

ঢাকার দুই উপজেলা নবাবগঞ্জ ও দোহারে খাসজমি বরাদ্দ পাননি ভূমিহীন ও নিঃস্ব মানুষেরা। বেশির ভাগ খাসজমি নিয়ে নিয়েছেন সচ্ছল ও ধনী লোকেরা। অথচ খাসজমি পাওয়ার যে শর্ত, তাতে বলা হয়েছে, এসব জমি পাবেন ভূমিহীনেরা। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, ভূমিহীনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘যে পরিবারের বসতবাড়ি ও কৃষিজমি কিছুই নেই, কিন্তু পরিবারটি কৃষিনির্ভর, তারা ভূমিহীন। এ ছাড়া যে পরিবারের ১০ শতাংশ পর্যন্ত বসতবাড়ি আছে, কিন্তু কৃষিজমি নেই, সেই পরিবারও ভূমিহীন গণ্য হবে। তবে বসতবাড়ির সঙ্গে কৃষিজমি থাকলে তারা ভূমিহীন হিসেবে খাসজমি পাবে না।’

এসব গেল কাগজ–কলমের কথা। কিন্তু কাজির গরু কিতাবেই থাকে, গোয়ালে নয়। ভূমিহীন হতে হলেও তাই টাকা লাগছে। যার যত টাকা, সে তত ‘ভূমিহীন’। নিজেকে ভূমিহীন দেখানোর দৌড়ে এগিয়ে আছেন সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, প্রবাসী থেকে শুরু করে সাংবাদিক পর্যন্ত। তাঁরাই পেয়েছেন খাসজমি। কেননা, টাকা ছাড়া তা মেলে না। আর প্রকৃত ভূমিহীনদের টাকা নেই। নবাবগঞ্জের হায়াতকান্দা গ্রামের অটোচালক আবুল কালাম অনেক ক্ষোভ নিয়ে বলেছেন, ‘যাদের টাকা আছে, তারাই জমি পায়। যাদের টাকা নাই, তাদের জমিও নাই।’ রাস্তার পাশে টিনের ছাপরায় থাকা নিঃস্ব আবুল কালাম তাই আবেদন করেও জমি পাননি।

ভূমিহীন হিসেবে খাসজমি পেয়েছেন দোহারের মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (সদ্য সাবেক) তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে, মেয়ে, ভাই, জামাইসহ অন্তত ২০ জন আত্মীয়। অথচ এই ‘ভূমিহীন’ তোফাজ্জল হোসেনের পারিবারিক বসতবাড়িটাই ৭০ বিঘা নিয়ে। ৭০ বিঘার চেয়ে ১০ শতাংশ কত গুণ বেশি, সেই হিসাব পাঠক জানলেও ভূমি অফিসের লোকজন হয়তো জানেন না। ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতায় নিঃস্ব উপেনের সর্বশেষ সম্বল জমিটুকু জমিদার বাবু নিতে চেয়েছিলেন তাঁর বাগানের সৌন্দর্য বাড়ানোর দরকারে। দোহারের জমিদারেরও তেমন প্রয়োজন হয়ে থাকবে হয়তো।

Related posts

বন্যার্তদের সহায়তায় ১,৭২০ টন চাল, পৌনে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ

News Desk

পদ্মা সেতুর কাজের মান নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

News Desk

নেপালে বন্যা ও ভূমিধসে ৩৩ জনের মৃত্যু

News Desk

Leave a Comment