Image default
প্রযুক্তি

মোবাইল মাথার কাছে রেখে ঘুমানো কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?

সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মোবাইল এখন মানুষের প্রিয় সঙ্গী। বলা যায়, মোবাইল ফোন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী। কিন্তু জানেন কি, মোবাইল ফোনের সার্বক্ষণিক ব্যবহার কীভাবে ক্ষতি করছে আপনার শরীরে?

একাধিক গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, মোবাইলের প্রতি আসক্তি ধীরে ধীরে আমাদের শেষ কর দিচ্ছে। এমনকি বাড়ছে ক্যানসারের মতো রোগের প্রকোপও। বিশেষত যারা মাথার কাছে ফোন রেখে ঘুমাতে যান, তাদের আয়ু তো চোখে পড়ার মতো কমছে। এর পেছনে মূল কারণ হলো রেডিয়েশন।

চীন ও আমেরিকার দুটি পৃথক গবেষণায় গবেষকরা দেখিয়েছেন, মোবাইল ফোনের সার্বক্ষণিক সঙ্গ, বিশেষত রাত্রে ঘুমনোর সময়ে শরীরের কাছাকাছি মোবাইল ফোন রাখা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই অভ্যাস প্রাণঘাতীও হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, বর্তমানে বেশির ভাগ মোবাইল ফোনেই ব্যবহৃত হয় লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। এই ব্যাটারি থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রায় ১০০টি গ্যাস নির্গত হয়, যেগুলো মানবশরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই সমস্ত গ্যাসের মধ্যে রয়েছে কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাসও। এই কার্বন মনোক্সাইড যদি অতিমাত্রায় শরীরে প্রবেশ করে তাহলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

তবে গবেষকরা জানাচ্ছেন, সাধারণভাবে মোবাইলের ব্যাটারি থেকে যে পরিমাণ গ্যাস নির্গত হয় তা প্রাণঘাতী মাত্রার নয়। তবে বিষয়টি সম্পর্কে মোবাইল গ্রাহকদের সচেতনতা অবশ্যই প্রয়োজন।

বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় যারা মোবাইল ফোন মাথার কাছে রেখে ঘুমায়। মোবাইলের প্রভাবে তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মোবাইলের ব্যাটারি থেকে নির্গত গ্যাসের প্রভাবে চোখ, নাক ও গলা জ্বলার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মোবাইল রেডিয়েশন সম্পর্কে কিছু তথ্য —

মোবাইল নেটওয়ার্কের টাওয়ার বা মোবাইল ফোনের Radiation বা তেজস্ক্রিয়া মানব দেহে কতটা ক্ষতিকর তা জানলে অবাক হবেন।

তেজস্ক্রিয়তা কী?-

তেজস্ক্রিয়তা হলো কোন কোন ভারী মৌলিক পদার্থের একটি গুণ যেগুলোর নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবিরত আলফা,বিটা,গামা রশ্মি বিকরণ হয়।

কিন্তু আলফা, বিটা, গামা রশ্মির চেয়ে মোবাইল টাওয়ার ও মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন কম হওয়াতেও এই রশ্মি মানবদেহে অনেক ক্ষতি করে।সাধারণত বাংলাদেশে ৫ টি মোবাইল নেটওয়ার্ক চলমান যাদের পুরো বাংলাদেশে ৪০ হাজার মোবাইল টাওয়ার আছে। যেগুলা জনসংঘমে ও বসবাসরত বাসারর ছাদে উপর অবস্থানরত। এসব টাওয়ার থেকে ক্ষতিকর রেডিয়েশন বিকিরণ হয় যা মানুষের ক্ষতি সাধন করে।শুধু মানুষের নয় বরং পরিবেশের উপর ক্ষতির সাধন করে।যেমন গাছ- গাছালির উপর মারাত্বক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে।বিশেষ করে নারিকেল গাছের নারকেল বা ডাবের সাথে রেডিয়েশন বিক্রিয়া করে ডাবের পানি শোষন করে বাতাসে ছড়িয়ে দেয়।আপনি নিজেও পরীক্ষা করে দেখতে পারেন মোবাইল টাওয়ারের নিকটবর্তী নারিকেল গাছের নারকেল বা ডাবের ভিতরে পানি নেই যা রেডিয়েশনের কারণে ঘটে।রেডিয়েশনে পাখিরাও ক্ষতি হয়।টাওয়ারের বিকিরণ রশ্মি চতুর্দিকে ছড়িয়ে থাকে যেটি নরম ও হালকা শরীরে বিস্তার করে।পাখিদের শরীর অত্যন্ত হালকা থাকায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

যেভাবে মুক্তি পেতে পারেন

বেশির ভাগ মানুষ বালিশের নিচে বা ঘুমানোর সময় হাতের নাগালে ফোনটি রাখেন যাতে সহজেই তা পাওয়া যায়। কিন্তু কীভাবে এই অভ্যাসটি দূর করবেন? ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোনটি বালিশের পাশে কিংবা বিছানার ওপর না রেখে কিছু দূরে কোনো কিছুর ওপরে রাখুন। এতে ফোনের রেডিয়েশন থেকে ঘুম নষ্ট হবে না। যখন অ্যালার্ম বাজবে তখন আপনাকে উঠে গিয়ে ফোন বন্ধ করতে হবে।

অনেকেই ফেসবুক চালাতে চালাতে ফোন চালু রেখেই ঘুমিয়ে যান। আবার অনেকেই ঘুমানোর আগে দীর্ঘ সময় মেইল ব্যবহার করেন বা গেম খেলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের অভ্যাস ঘুমানোর জন্য মোটেও ভালো নয়। এতে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে। আপনার ফোন ব্যবহার সীমিত করুন। গুরুত্বপূর্ণ কল বা বার্তা শোনার অপেক্ষার নিয়ম বদলে ফেলুন।

অনেকেই আবার মোবাইল ফোনে গান চালিয়ে তা শুনতে শুনতে ঘুমান। দেখা যায়, মোবাইল ফোনের সঙ্গে হেডফোন লাগিয়ে তা কানে দিয়ে ঘুমানোর আগে গান চালাচ্ছেন অনেকেই। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় ব্লুটুথ হেডফোনের ব্যবহার। আপনার ফোনটিকে দূরে রেখে আপনি ব্লুটুথ হেডফোন দিয়ে গান শুনতে পারেন।

আপনি কতক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন তার একটি দৈনন্দিন রুটিন তৈরি করুন। আপনি বাড়িতে ঢুকেই কতক্ষণ ফোন চালাবেন, তা ঠিক করে নিন এবং কখন ঘুমাতে যাবেন—সময় নির্দিষ্ট করে রাখুন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট ওই সময়ের মধ্যেই কেবল ফোন ব্যবহার করবেন আর রাতের বাকি সময়টাতে সকাল না হওয়া পর্যন্ত আর ফোন স্পর্শ করবেন না। এটা যদি অভ্যাস হিসেবে গড়ে ওঠে, তখন আপনার ফোনটিকে সব সময় বিছানার পাশে হাতড়ে বেড়াতে হবে না কিংবা ঘুমের বিঘ্ন হবে না। মোবাইলে ক্যান্ডি ক্রাশ খেলে ঘুমাতে যাওয়ার চেয়ে কোনো একটি বই হাতে তুলে নিতে পারেন, যাতে মস্তিষ্ক কিছুতেই বিক্ষিপ্ত না হয়। এবার ঘুমাবেন শান্তিতেই।

Related posts

৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ পরিকল্পনা হুয়াওয়ের

News Desk

কে তুলেছিলেন বিশ্বের প্রথম ফটোগ্রাফ

News Desk

অবশেষে ১০ ডিসেম্বরের বিএনপির সমাবেশ হবে গোলাপবাগ মাঠে

News Desk

Leave a Comment