চলমান এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে টিকে থাকার লড়াইয়ে কাল পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে আফগানিস্তান। অন্যদিকে ফাইনালে চোখ রাখা পাকিস্তান মাঠে নামবে ম্যাচটি জিতে ফাইনালের পথটি সুগম করতে।
আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।
সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে বেশ সুবধাজনক অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান, আর দুর্দান্তভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করা আফগানিস্তান সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে হেরে কিছুটা ব্যাকফুটে আফগানরা।
কালকের ম্যাচে জিতলেই পাকিস্তানের ফাইনাল খেলা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প পথ নেই আফগানিস্তানের।
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে গ্রুপ পর্বের সেরা দল হয়েই সুপার ফোর নিশ্চিত করেছিলো আফগানিস্তান। তবে সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হার ৪ উইকেটে হেরে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ে আফগানরা। প্রথমে ব্যাটিংইয়ে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ৪৫ বলে ৮৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেন। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংইয়ের সাআমনে লড়াই করতে পারেননি আফগান বোলাররা।
অন্য দিকে গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে হারের হংকংকে উড়িয়ে দিয়ে সুপার ফোরে উঠে পাকিস্তান। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে আবারও ভারতকে সামনে পায় পাকিস্তান। ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও মোহাম্মদ নাওয়াজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভারতের ছুঁড়ে দেয়া ১৮২ রানের টার্গেট ১ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে যায় পাকিস্তান। রান তাড়ায় নেমে ৫১ বলে ৭১ রান করে পাকিস্তানকে ভালো সূচনা এনে দেন রিজওয়ান। তবে পাকিস্তানকে জয় এনে দেয়ার কাজটি করেন মোহাম্মদ নেওয়াজ। ২০ বলে ৪২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন নেওয়াজ।
ভারতের বিপক্ষে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়েই এক্টা খারাপ সংবাদও পায়ু পাকিস্তান। ম্যাচ শেষেই হাসপাতালে ছুটে যেতে হয় রিজওয়ানকে। ফিল্ডিংয়ের সময় ডান পায়ের হাঁটুতে ব্যাথা পান তিনি। অস্বস্তি নিয়ে ১৭তম ওভার ব্যাট করে দলের জয়েও বড় অবদান রাখেন তিনি। হাসপাতালে এমআরআই স্ক্যান করা হয়েছে তাঁর হাঁটুতে। সেই রিপোর্ট পেলে তবেই রিজওয়ানের ইনজুরির পরিস্থিতি সর্ম্পকে জানতে পারবে পাকিস্তান।
তবে আপাতত সেসব নিয়ে চিন্তা না করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের দিকেই বেশি মনোযোগী পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজম বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে দারুন এক জয়ে দলের সবাই ফুরফুরে মেজাজে আছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের ধারা অব্যাহত থাকলে, ফাইনাল প্রায়ই নিশ্চিত হবে আমাদের। তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে সবাই বেশি আগ্রহী।’
অন্যদিকে, পাকিস্তানের মত নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ নিয়ে বেশ ভাবছে আফগানিস্তান। কারন এ ম্যাচ হারলেই ফাইনাল খেলার আশা শেষ হয়ে যাবে। ফাইনালে খেলার আশা ধরে রাখতে হলে জয় ছাড়া কোন উপায় নেই তাদের। তাই তাই যেকোন মূল্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেতে মাঠে নামবে মোহাম্মদ নবীর দল।
আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের ভালো সুযোগ নষ্ট করেছি আমরা। বোলাররা ভালো করতে পারলে, জিততে পারতাম আমরা। তবে অতীতের ভুলগুলো দ্রুতই শুধরে নিতে হবে। কারন পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহুর্তে আমরা জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না।’
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ২বার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। দুই ম্যাচেই জয়ী দলের নাম পাকিস্তান। ২০১৩ সালে এই শারজাতেই প্রথম দেখায় ৬ উইকেটে জিতেছিলো পাকিস্তান। এরপর গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ৫ উইকেটে আফগানদের হারায় পাকিস্তান। তবে ঐ ম্যাচের ১৮ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ জয়ের দারুন সুযোগ ছিলো আফগানিস্তানের। শেষ ২ ওভারে ২৪ রান তুলে জয় পায় পাকিস্তান।
এশিয়া কাপের মঞ্চেও এর আগে দু’বার দেখা হয়েছে দুই দলের। ওয়ানডে ফরম্যাটের ঐ দুই দেখাতেও জয় পেয়েছে পাকিস্তান। ২০১৪ সালে ৭২ রানে এবং ২০১৮ সালে ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে বাবর আজমের দল।
পাকিস্তান দল:
বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), শাদাব খান, ফখর জামান, হায়দার আলি, হারিস রউফ, আসিফ আলি, ইফতিখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নাওয়াজ, হাসান আলি, নাসিম শাহ, শাহনেওয়াজ দাহানি, মোহাম্মদ হাসনাইন ও উসমান কাদির।
আফগানিস্তান দল:
মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), নাজিবুল্লাহ জাদরান, আফসার জাজাই, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, ফরিদ আহমদ, ফজলহক ফারুকী, হাসমতউল্লাহ শাহিদি, হযরতউল্লাহ জাজাই, ইবরাহিম জাদরান, করিম জানাত, মুজিব উর রহমান, নাভিন-উল-হক, নূর আহমদ, রশিদ খান ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারি।