Image default
আন্তর্জাতিক

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা। সোমবার রাত আটটা থেকে মঙ্গলবার রাত আটটা পর্যন্ত মমতার প্রচার নিষিদ্ধ বলে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের রোষে পড়লেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার করতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। বলা হয়েছে, প্ররোচনামূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগে মমতাকে পাঠানো নোটিসের জবাবে কমিশন সন্তুষ্ট না হওয়াতেই ২৪ ঘণ্টার এই নিষেধাজ্ঞা। বিজেপি চেয়েছিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আনা হোক । তবে তৃণমূলের তরফে কমিশনের এই সিদ্ধান্তের জন্য কমিশনকে বিজেপি-র শাখা সংগঠন বলে সমালোচনা করা হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘”মানুষ এর জবাব দেবে। পক্ষপাতদুষ্ট কমিশন বিজেপি-র শাখা সংগঠন। ভোটের বাক্সে এর জবাব দেবে মানুষ।” দলের আর এক মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘”এটা গণতন্ত্রের পক্ষে কালো দিন।”

কেনও এই নির্দেশ কমিশনের? ৩ এপ্রিল মমতা তারকেশ্বরের সভা থেকে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর আব্বাস সিদ্দিকির নাম না করে মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তার পরেই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘”সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। বিজেপি এলে মনে রাখবেন সমূহ বিপদ, সবচেয়ে বেশি আপনাদের।” কমিশনের যুক্তি, ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী। কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী তাঁর প্রার্থীপদ খারিজও করা যেতে পারে। তা নিয়েই নোটিস পাঠায় কমিশন।

এর পর কোচবিহারের জনসভা থেকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘নির্দেশে’ই সিআরপিএফ-এর একাংশ বিজেপি-র হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিআরপিএফ যদি গন্ডগোল করে, মেয়েদের একটা দল মিলে ওদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর একটা দল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে রাখলে ভোট দেওয়া হবে না। তাই ভোট নষ্ট করবেন না। ৫ জন ঘেরাও করবেন। ৫ জন ভোট দেবেন।” কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার মন্তব্যে এর আগে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং কোচবিহারের জেলা শাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন। তার জন্য মমতাকেও নোটিস পাঠানো হয়।

গত শনিবারই কমিশনকে সেই নোটিসের জবাব দেন মমতা। কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য সংক্রান্ত অভিযোগের জেরে নির্বাচন কমিশনের পাঠানো শো-কজ নোটিসের জবাব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার কমিশনে পাঠানো জবাবে তৃণমূলনেত্রী লিখেছেন, “কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিআরপিএফ)-র প্রতি আমার সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। দেশের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তায় তাদের অবদান খুব উঁচুতে”।

এর ফলে মমতার মঙ্গলবারের সফরসূচি বাতিল হল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে মঙ্গলবার বারাসত, বিধাননগর, হরিণঘাটা ও কৃষ্ণগঞ্জে মমতার সভা করার কথা ছিল। শনিবার কোচবিহারের শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর পরে রবিবার সেখানে যাবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন মমতা। সেই ঘোষণার পরেই কমিশন ৭২ ঘণ্টার জন্য যে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের শীতলখুচিতে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর পরে মমতার প্রচারে নিষেধাজ্ঞা। তৃণমূলের বক্তব্য, গোটাটাই হচ্ছে বিজেপি-র নির্দেশে।

প্রসঙ্গত এর আগে মমতাকে দু’টি নোটিশ পাঠিয়েছিল কমিশন। হুগলির তারকেশ্বরে গত ৩ এপ্রিল মমতা বিধিভাঙা মন্তব্য করেছেন বলে কমিশন একটি চিঠিতে জানিয়েছিল। এর পরে একটি জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘”আমাকে ১০ বার শো-কজ করেও লাভ নেই। একই জবাব দেব।” কমিশনের অভিযোগ প্রসঙ্গে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নন্দীগ্রামে মুসলিমদের যাঁরা পাকিস্তানি বলেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ক’টা অভিযোগ হয়েছে? খালি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ?” কমিশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ এবং ৭ এপ্রিল প্রচার সভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে মন্তব্যের জেরেও নোটিস পাঠানো হয়।

Related posts

জাতিসংঘের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মালয়েশিয়া

News Desk

জন্মহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে চীন: শি জিনপিং

News Desk

পাকিস্তানের পাশে থাকার অঙ্গীকার করল চীন

News Desk

Leave a Comment