Image default
আন্তর্জাতিক

পেটেন্ট উন্মুক্তের পক্ষে রাশিয়া ফ্রান্স ইতালি

করোনাভাইরাসরোধী টিকার পেটেন্ট বা মেধাসম্পদ উন্মুক্তের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে রাশিয়া, ফ্রান্স ও ইতালি। তবে এখনো এর ঘোর বিরোধী জার্মানি। আর এতদিন বিরোধিতা করা ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, তারা এই ইস্যু নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি।

বুধবার করোনারোধী এক ডোজের টিকা স্পুটনিক লাইট উন্মুক্তের দিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তিনিও করোনা টিকার পেটেন্ট উন্মুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে একমত।

রাশিয়ার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী তাতিয়ানা গোলিকোভার সঙ্গে এক বৈঠকে পুতিন বলেন, আমরা ইউরোপ থেকে করোনা টিকার পেটেন্ট উন্মুক্ত করে দেয়ার একটি পরিকল্পনার কথা শুনছি। রাশিয়া অবশ্যই এ ধরনের পদক্ষেপে সমর্থন করে।

ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি আগেও বহুবার বলেছি… কীভাবে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করা যায় তা নিয়ে নয়, বরং মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে ভাবা উচিত।

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় টিকাসহ জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামগুলোর পেটেন্ট উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে গত অক্টোবরে ডব্লিউটিও‘তে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ পর্যন্ত তাদের ওই প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে ১০০টিরও বেশি দেশ।

পেটেন্ট উন্মুক্ত হলে বিশ্বজুড়ে টিকার উৎপাদন বাড়বে এবং দরিদ্র দেশগুলোর টিকাপ্রাপ্তির পথ আরও সুগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

কিন্তু পেটেন্ট উন্মুক্তের এ প্রস্তাবে তীব্র বিরোধিতা করে ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের সঙ্গে একমত জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যের মতো অন্য ধনী রাষ্ট্রগুলো।

তবে নির্বাচনের আগে থেকেই করোনা টিকার পেটেন্ট উন্মুক্ত করার কথা বলে আসছিলেন জো বাইডেন। ক্ষমতালাভের পরে সেই অবস্থান বদলাননি তিনি। গত বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় প্রস্তাবটির পক্ষে মত দিয়েছে তার প্রশাসন। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সারাবিশ্বে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ওই প্রস্তাবের পক্ষে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ফ্রান্স ও ইতালির কর্মকর্তারা। তবে পেটেন্ট উন্মুক্ত না করার পক্ষে এখনো অনড় বিশ্বের অন্যতম ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য নির্মাতা জার্মানি।

জার্মান সরকারের মতে, নতুন নতুন উদ্ভাবনের জন্য মেধাসম্পদ রক্ষা করা আবশ্যক এবং সেটি অবশ্যই সেভাবে থাকা উচিত। তারা বলছে, উৎপাদন সক্ষমতা এবং উচ্চমাত্রার মান নিশ্চিত করতে গিয়েই টিকার উৎপাদন কম হচ্ছে। এর সঙ্গে পেটেন্ট উন্মুক্ত করার কোনো সম্পর্ক নেই।

যুক্তরাজ্য বলেছে, তারা ইস্যুটি সমাধানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে কাজ করছে। এছাড়া করোনা টিকার উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র এবং ডব্লিউটিও সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে তারা।

পেটেন্ট উন্মুক্তকরণ নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো এভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ায় আগের অবস্থান থেকে কিছুটা নমনীয় হয়েছে ইইউ। এতদিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করা ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

চলতি সপ্তাহেই ইইউর দুই দিনব্যাপী বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

Related posts

বিশ্বে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ হাজারের বেশি মৃত্যু

News Desk

নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে আনিসের পরিবার

News Desk

মারা গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেরা ভাইস-প্রেসিডেন্ট’ ওয়াল্টার

News Desk

Leave a Comment