Image default
আন্তর্জাতিক

নেতানিয়াহুর বিদায় দু’দিনের মধ্যে

রেকর্ড সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার পর ইসরায়েলে শেষ হতে যাচ্ছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুগের। ইসরায়েলের বিরোধী নেতা জোটগত ভাবে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে নেতানিয়াহুর বিদায়ও।

তবে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দাবি, প্রস্তাবিত নতুন জোট সরকার ইসরায়েলের ‘নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক’ হতে পারে। উগ্র-জাতীয়তাবাদী নেতা নাফতালি বেনেট মধ্যপন্থী ইয়াইর লাপিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ঘোষণার পর কোনো ধরনের চুক্তিতে সমর্থন না দিতে ডানপন্থী রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

নতুন জোট সরকার গঠনের জন্য বুধবার পর্যন্ত সময় হাতে পাবেন ইয়াইর লাপিদ। তিনি সরকার গঠন করতে সক্ষম হলে তা হবে দেশটির সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা নেতানিয়াহুর ক্ষমতার অবসান।

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, বিরোধী নেতা লিপিদ সরকার গঠনে সক্ষম একটি জোট গঠনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন। উগ্র জাতীয়তাবাদী নেতা নাফতালি বেনেটের সঙ্গে চুক্তিও প্রায় করে ফেলেছেন। বেনেটের দল ইয়ামিনা পার্টির পার্লামেন্টে ছয় আসন আছে।

বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন রয়েছেন। গত মার্চে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হন তিনি। এটা ছিল গত দুই বছরে দেশটিতে চতুর্থ নির্বাচন যেখানে জোট গঠনে মিত্র পেতে ব্যর্থ হন তিনি।

রোববার নেতানিয়াহু বলেন, ‘বামপন্থী কোনো সরকার গঠন করবেন না- এ ধরনের সরকার ইসরায়েলের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক হবে।’

৭১ বছর বয়সী নেতানিয়াহু ১২ বছর ধরে দেশটির শাসন ক্ষমতায় রয়েছেন এবং একটি প্রজন্ম ধরে তিনি ইসরায়েলি রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন। তবে বামপন্থী কোনো সরকার শাসন ক্ষমতায় এলে ইসরায়েলের কি বিপদ হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

নাফতালি বেনেটের বিরুদ্ধে ‘জনগণকে ভুল পথে চালিত করা’ এবং ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জালিয়াতি’ করার অভিযোগ এনেছেন নেতানিয়াহু। এর আগে এক টেলিভিশন ভাষণে ৪৯ বছর বয়সী বেনেট ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন যে, জোট গঠন করতে তার দল আলোচনায় অংশ নেবে।

বেনেট বলছেন, ‘নেতানিয়াহু কোনো ডানপন্থী দল গঠন করার চেষ্টা করছেন না কারণ তিনি ভালো ভাবেই জানেন যে সেটা সম্ভব নয়। তিনি পুরো জাতি, পুরো দেশ তার নিজের ব্যক্তিগত অবস্থান পোক্ত করার জন্য পেতে চাইছেন। আমার বন্ধু ইয়াইর লাপিদের সঙ্গে একটি জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সরকার গঠনের জন্য সবকিছু করবো।’

এই ঘোষণার আগে, ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, জোটের শর্ত অনুযায়ী, বেনেট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতানিয়াহুর জায়গা নেবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর ৫৭ বছর বয়সী লাপিদকে সে জায়গা ছেড়ে দেবেন। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এমন কোনো চুক্তি করা হয়নি।

নেতানিয়াহু জোট সরকার গঠনে ব্যর্থ হওয়ার পর সাবেক অর্থমন্ত্রী লাপিদকে ২ জুন পর্যন্ত নতুন সরকার গঠনের সময় দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচনে তার ইয়েশ আতিদ পার্টি দ্বিতীয় অবস্থানে আসে। প্রথম অবস্থানে ছিল নেতানিয়াহুর ডানপন্থী দল লিকুদ পার্টি।

১২০ আসনের পার্লামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি আসন পেয়েছে বেনেটের দল। যা প্রস্তাবিত বিরোধী জোট গঠনে নিশ্চিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে সক্ষম। শনিবার রাতে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি বেনেট এবং আরও একটি নেতাকে জোট গঠনের প্রস্তাব দেয়। যাতে করে পালাক্রমে তিনজনই প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। তবে তার সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি নেতারা। রোববারও একই প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি।

ইসরায়েলের নির্বাচন পদ্ধতি অনুযায়ী, সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার শর্ত থাকায় কোনো একটি দলের পক্ষে এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন লাভ করা সম্ভব নয়। জোট সরকার গঠনের জন্য ছোট ছোট দলগুলোকেও দরকার হয়।

লাপিদকে প্রাথমিকভাবে সরকার গঠনের জন্য ২৮ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক ১১ দিন ধরে গাজা সহিংসতার কারণে এই সময় কমে এসেছে। সহিংসতার কারণে দলটির সম্ভাব্য জোট সহযোগী আরব ইসলামিস্ট রাম পার্টি নিজেদের পিছিয়ে নিয়েছে। ইসরায়েলের শহরগুলোতেও মিশ্র আরব এবং ইহুদি বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষেরও খবর মিলেছে

Related posts

চীনে রেস্টুরেন্টে আগুন, নিহত ১৭

News Desk

চীনের কৌশলী বাণিজ্যনীতি ঠেকাতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট

News Desk

ইউক্রেন যুদ্ধে গরিব হতে পারেন এক কোটি মানুষ: মার্কিন অর্থমন্ত্রী

News Desk

Leave a Comment