Image default
আন্তর্জাতিক

দ. এশিয়ায় টিকার সরবরাহ আগামী সপ্তাহে শুরু হবে: অ্যাস্ট্রাজেনেকা

ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, তাদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের ‌‘যত দ্রুত সম্ভব’ সরবরাহ নিশ্চিত করতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে তারা। থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী রাজার মালিকানাধীন একটি প্ল্যান্ট থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় কয়েক কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের সরবরাহ হওয়ার কথা থাকলেও অজানা কারণে তা বিলম্ব হচ্ছে।

এই বিলম্বের জেরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ভ্যাকসিনের সরবরাহ আগামী সপ্তাহে শুরু হতে পারে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

চলতি সপ্তাহে থাইল্যান্ডে উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সরবরাহ এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে প্রথমে মালয়েশিয়া এবং তাইওয়ানে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু অজানা কারণে টিকার সরবরাহ বিলম্ব হতে পারে বলে দেশ দু’টিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, আমাদের কোভিড-১৯ টিকার সরবরাহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক সরকারের সঙ্গে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। তবে থাইল্যান্ডের প্ল্যান্টে বর্তমান কি পরিমাণ টিকা উৎপাদন হচ্ছে ও ভবিষ্যতে কেমন হবে সে বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেয়নি অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের মালিকানাধীন কোম্পানি সিয়াম বায়োসায়েন্স প্রথমবারের মতো টিকা উৎপাদন করছে। এই কোম্পানিতে উৎপাদিত ২০ কোটি ডোজ টিকার ওপর নির্ভর করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বিতরণের পরিকল্পনা করছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন সিয়াম বায়োসায়েন্সের একমাত্র মালিক হওয়ায় কোম্পানিটি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলা বেশ স্পর্শকাতর। থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের সম্মানহানি করা হলে তা দেশটির আইনে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গত জানুয়ারিতে সিয়াম বায়োসায়েন্স জানায়, তাদের বছরে ২০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। যা প্রত্যেক মাসে গড়ে দেড় কোটি থেকে ২ কোটি পর্যন্ত হতে পারে। তবে থাই এই কোম্পানি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার কেউই তাদের উৎপাদনের মোট লক্ষ্যমাত্রা অথবা সায়েম বায়োসায়েন্স উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণ করতে পারছে কি না সেবিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

গত সপ্তাহে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের একজন উপদেষ্টা বলেছেন, থাইল্যান্ড থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১ কোটি ৭০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কিন্তু ফিলিপাইনে প্রথম চালানের ডোজের সংখ্যা হ্রাস এবং কয়েক সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

থাইল্যান্ডও জুনের মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৬০ লাখ ডোজ পাওয়ার প্রত্যাশা করছে। গত সপ্তাহে দেশটি স্থানীয়ভাবে তৈরি ১৮ লাখ এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ২ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বেশ কয়েক মাস আগে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও টিকা উৎপাদন এবং সরবরাহের সমস্যার মুখে পড়ে। তাইওয়ানে উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা থাকলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। সরবরাহ চুক্তি লঙ্ঘনের দায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

এছাড়া ভারতে গত মার্চে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটও বিপদে পড়ে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার উৎপাদনকারী এই প্রতিষ্ঠানের টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারতের সরকার। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকাদান কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হয়।

Related posts

ইরানের এভিন কারাগারে গোলাগুলিতে নিহত ৪

News Desk

রাত ১০টার পর আর বিয়ে করা যায় না যেখানে

News Desk

এক শর্তে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি বাইডেন

News Desk

Leave a Comment