Image default
আন্তর্জাতিক

আফগান মেয়েদের নিয়ে বিশ্বকে সরব হওয়ার ডাক মালালার

আফগানিস্তানের মেয়েদের অধিকার রক্ষা ও তাদের স্কুলে যেতে দিতে তালেবানের কাছে চিঠি লিখেছেন মালালা ইউসুফজাই। আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে মাধ্যমিক পড়ুয়া মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে তালেবান। এর মধ্যে ছেলেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

যদিও গত রোববার তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র শিগগিরই মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে ইসলামি আইন কায়েম ও সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর মেয়েদের স্কুলে ফিরতে দেওয়া হবে। যদিও তাদের এই বক্তব্যে সন্দেহ প্রকাশ করেছে অনেকে।

মালালা ও অনেক আফগান নারী অধিকারকর্মী স্বাক্ষরিত একটি খোলা চিঠি প্রকাশিত হয় গত রোববার। এতে বলা হয়, ‘বরাবর, তালেবান কর্তৃপক্ষ; মেয়েদের শিক্ষার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুন এবং অবিলম্বে মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় পুনরায় চালু করুন।’

মুসলিম বিশ্বের নেতাদের উদ্দেশে মালালা বলেন, তালেবানকে এটা পরিষ্কার করুন যে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে ধর্ম বাধা হতে পারে না।

মালালার খোলা চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বে আফগানিস্তানই একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়েদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। চিঠিতে লেখকেরা জি-২০ নেতাদের আফগানিস্তানের শিশুদের শিক্ষার পরিকল্পনার জন্য জরুরি তহবিল দেওয়ার আহ্বান জানান।

২০১২ সালে স্কুলে যাওয়ার পথে জঙ্গি হামলার শিকার হন মালালা। পরে ওই হামলার দায় স্বীকার করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান। ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান মালালা। বর্তমানে তিনি তাঁর দাতব্য সংস্থা মালালা ফান্ডের মাধ্যমে মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর দাতব্য সংস্থা থেকে ২০ লাখ মার্কিন ডলার আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষায় সহায়তার জন্য অনুদান দেওয়া হয়েছে।

গত আগস্ট মাসে তালেবান দেশটির দখল নেওয়ার পর থেকেই বন্ধ আছে মেয়েদের জন্য চলা সব স্কুলগুলো। শুধুমাত্র বাল্ক, কুন্দুজ ও সার-ই-পালের কয়েকটি স্কুলে মেয়েরা শিক্ষাগ্রহণ করতে পারছে।এ প্রসঙ্গে এক আফগান নারী শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন তালেবান সরকার খুব দ্রুতই মেয়েদের জন্য স্কুলগুলো খুলে দিবে। সামনে যেহেতু শীতকাল আসছে এবং স্কুলগুলোতে সুযোগ-সুবিধা খুবই কম, তাই শীতের আগেই স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে এক স্কুল শিক্ষক বলছেন, মেয়েদের শিক্ষাগ্রহণের পূর্ণ অধিকার রয়েছে। তাই স্কুলগুলো খুব দ্রুত খুলে দেওয়া উচিত বলেই মনে করছেন তিনি। নারীরা সমাজের একটি বড় অংশ, এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, এই বড় একটি অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করা উচিত হবে না।

এদিকে, নারী ও মেয়ে শিশুদের প্রসঙ্গে দেওয়া প্রতিশ্রুতি তালেবান রক্ষা করেনি বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এ সময় তালেবানের কঠোর নিন্দা করে গুতেরেস আরও বলেন, ‘তালেবানের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হতে দেখে আমি বিশেষভাবে শঙ্কিত। নারী ও শিশুদের প্রতি তালেবানের করা প্রতিশ্রুতি রক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ তালেবানের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলা উচিত বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Related posts

সেরামের আগামী তিন মাস ভ্যাক্সিন রপ্তানির নিশ্চয়তা নেই

News Desk

নিরপরাধ ফিলিস্তিনি শিশুর চোখে গুলি ইসরায়েলি সেনার

News Desk

প্রেমিকের মারধরে অজ্ঞান প্রেমিকা

News Desk

Leave a Comment