Image default
বাংলাদেশ

স্বপ্নের সেতুর দুই প্রান্তে হাজারো মানুষের ভিড়, উৎসবের আমেজ

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ জুন। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত দেশের সবচেয়ে বৃহৎ এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে সড়কপথে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা এবং আশপাশের জেলার যোগাযোগে ইতিহাস রচিত হতে যাচ্ছে। সেই সেতুর উদ্বোধন নিয়ে তাই সবার বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। প্রতিদিন দূর-দূরান্তের হাজার হাজার দর্শনার্থী পদ্মাপাড়ে ভিড় করছেন সেতুটি একনজর দেখার জন্য। স্বপ্নের সেতুর দুই প্রান্তে এখন উৎসবের আমেজ।  

বুধবার বিকালে সরেজমিন দেখা যায়, লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ফেরিঘাট ও কান্দিপাড়াসহ সেতুর আশপাশের এলাকায় হাজারো মানুষের ভিড়। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকেও অনেকে এসেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে। প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় পদ্মা সেতু এলাকা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা নানা বয়সী মানুষ ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠছে পদ্মা সেতু এলাকা।

ঢাকা থেকে সেতু দেখতে আসা আল-আমিন শেখ বলেন, ‘আমার বাড়ি খুলনায়। ঢাকার সঙ্গে খুলনায় যাতায়াতে এখন আর বেশি সময় লাগবে না। এজন্য হয়তো ঢাকা থেকে এসে খুলনায় বসবাস করতে পারি। বাড়িতে যেতে আমার শিমুলিয়া ফেরিঘাটেই প্রায় চার-পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। এখন আর সেটা করতে হবে না। এখন পদ্মা পাড়ি দিতে হয়তো ১০ মিনিট লাগবে। আমি মনে করি, এটি শুধু সেতু উদ্বোধন না, একটি স্বপ্নের উদ্বোধন।’

সাভার থেকে পরিবার নিয়ে আসা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। কবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সেই ২৫ তারিখ আসবে, আমরা ক্ষণ গুনছি।’

নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নির্মাণাধীন সেতুর মূল কাঠামো ও নির্ধারিত সংরক্ষিত এলাকায় দর্শার্থীদের প্রবেশের অনুমতি নেই। এ কারণে দূর থেকেই একনজর সেতু দেখার জন্য ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। এ ছাড়া ভাড়া করা ট্রলার নিয়েও পদ্মা নদীতে ঘুরে সেতু দেখার চেষ্টা করছেন অনেকে।

পাশের দেশ ভারত থেকে আসা নমিতা ঘোষ বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষ ছিলেন বাংলাদেশে। তাই আমরা মাঝে মাঝে বেড়াতে আসি বাংলাদেশে। পদ্মা নদীর নাম তো অনেক শুনেছি, আজ  সপরিবারে নদীর পাশাপাশি সেতুটা দেখলাম। ট্রলারে করে সেতুর কাছাকাছি গিয়ে ঘুরতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। সবাইকে নিয়ে অনেক মজা করেছি।’

দূর থেকেই একনজর সেতু দেখার জন্য ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা ট্রলারচালক আমির হোসেন বলেন, ‘ট্রলারে করে পদ্মা সেতু দেখতে আমাদের ঘাটে অনেক লোকজন আসে। আমরা তাদের সতর্কতার সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে সেতুর ২নং পিলার থেকে ২৪নং পিলার পর্যন্ত ঘুরিয়ে নিয়ে আসি। একটি ট্রলারে আমরা ১২ জন যাত্রী নিয়ে থাকি। ভাড়া ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা।’

মুন্সীগঞ্জ টুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোমেন মিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প এই পদ্মা সেতু দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ আসে। তাদের নিরাপত্তায় আমরা সব সময় নিয়োজিত রয়েছি।’          

পদ্মা সেতু প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৫ জুন ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল এই সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Source link

Related posts

রাজনগরে সকালে ছেলে রাতে মায়ের মৃত্যু

News Desk

লাশ বাড়ি নেওয়ার টাকা ছিল না, হাত বাড়ালেন পুলিশ কর্মকর্তা

News Desk

ফরিদপুর মেডিকেলে ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যু

News Desk

Leave a Comment