মাদিন মিয়া। ফেরি করে মিষ্টি-সন্দেশ বিক্রি করে থাকেন। সামান্য আয়ে ছেলে-মেয়েসহ চার সদস্যের সংসার চলে। তিনপুরুষ ছিলেন উদ্বাস্তু। তার ভাগ্য বদলেছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে। জীবন সায়াহ্নে এসে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে তৃপ্ত মাদিন মিয়া। বলা হচ্ছে, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের তালুক শাদুল্লাহ গ্রামের মাদিন মিয়ার কথা। তার বাবা-দাদারাও এখানেই ছিলেন। বুঝতে শেখার পর থেকে মানুষের জমি বা সরকারি জায়গায় ছাপড়া করে সেখানেই কাটিয়েছেন রাত। দিনে পাড়া-মহল্লায় মিষ্টি, সন্দেশ ফেরি করেন। সেই আয়েই কোনোরকমে সংসার চলে। কখনো বাড়িঘর করার চিন্তাও মাথায় আসেনি। কিন্তু মাদিন মিয়া সেই ‘অভাবনীয়’ বাড়িঘর পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমি কারও কাছে কিছু চাইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ থেকে আমাকে বাড়িঘর দিয়েছে। তিনি আজীবন (প্রধানমন্ত্রী) থাকুক, আমার আর কোনো স্বপ্ন নাই। শেখ হাসিনা এদেশের সম্পদ। তিনি যুগ যুগ বেঁচে থাকুক। মাদিন মিয়া আরও বলেন, ‘কী যে শান্তি পাইছি বলে বুঝাতে পারব না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন, খুশি করেছেন, তার জয় হোক। আল্লাহ তারে খুশি করুক। একই গ্রামের ৩০ বছর বয়সী নারী লিলি বেগম। তিন মেয়েকে নিয়ে স্বামীহীন এই নারী লড়ছেন জীবনযুদ্ধে।
তিনি বলেন, ‘নদী ভাঙনের পরে এখানে সরকারি জায়গায় আশ্রয় নিছি। এক মেয়েকে বিয়েও দিছি। এখন শেখ হাসিনা বাড়িঘর করে দিছে, জীবনটা একটু সহজ হলো, ঠাঁই হলো একটা। আল্লাহ যেনে তাকে বাঁচান, গরিবকে যেন আরও উপকার করতে পারেন। প্রতিবেশী ময়নার (৩৮) জীবনচিত্র একই। স্বামী শিপন রিকশা চালান। দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তাদেরও কষ্টের জীবনে আশ্রয় হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে। তিনি বলেন, ‘আগে তো কিছুই ছিল না। প্রধানমন্ত্রী এখন বাড়িঘর দিলেন, এটাই বড়। মাদিন মিয়া, লিলি বেগম আর ময়নাদের মতো তেওতা ইউনিয়নের ৩৬ পরিবারের জীবন পাল্টে গেছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের কারণে। উদ্বাস্তু এসব পরিবার পেয়েছে বাস্তু। এভাবে সারাদেশে ৫৩ হাজার পরিবারকে জমির মালিকানাসহ পাকাঘর করে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প থেকে।
এ বিষয়ে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মাহবুব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘তেওতা ইউনিয়নের মতো সারাদেশে এবার ৫৩ হাজার ৫১৪ উদ্বাস্তু পরিবারকে জমিসহ পাকাঘর করে দেয়া হচ্ছে। ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করে আনুষ্ঠানিক চাবি হস্তান্তর করবেন। এর আগে আমরা ৭০ হাজার পরিবারকে জমির মালিকানাসহ পাকা ঘর করে দিয়েছি। এভাবে ধাপে ধাপে ১০ লাখ পরিবারকে আশ্রয়ণের আওতায় আনার কার্যক্রম চলমান।