Image default
বাংলাদেশ

লকডাউনে নিম্নআয়ের মানুষের ভোগান্তি চরমে

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের গৃহবধূ রাবেয়া বেগম (রেবু)। ধানমন্ডির একটি অভিজাত পরিবারে গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। লকডাউনের আগে কামরাঙ্গীরচর থেকে পায়ে হেঁটে আজিমপুর থেকে বাসে করে ধানমন্ডি নেমে গৃহকর্তার বাসায় যেতেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গতকাল থেকে কামরাঙ্গীরচর থেকে ধানমন্ডি অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল ৯টায় তাকে নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড় অর্থাৎ মিরপুর রোড ধরে বৃষ্টিতে ভিজে দ্রুতপায়ে হাঁটতে দেখা যায়। কৌতূহলবশত তিনি কোথায় যাচ্ছেন জিজ্ঞাসা করা হলে কিছুটা ইতস্তত হয়ে বলেন, ধানমন্ডির এক বাসায় কাজ করতে যাই। কথাপ্রসঙ্গে তিনি জানান, লকডাউন ঘোষণা করায় গৃহকর্তা তাকে সাতদিন কাজে যেতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু কাজ না করলে বেতন কাটা যাবে এ আশঙ্কা থেকে তার আসতে কোনো সমস্যা হবে না বলে কাজে যাওয়া বন্ধ করেননি।

আলাপকালে রেবু জানান, ঘরে স্বামীসহ পাঁচ সদস্যের সংসার। স্বামী অসুস্থ, সন্তানরা ছোট ছোট, তার একার আয়ে সংসার চলে। লকডাউনে বাসা থেকে ধানমন্ডি হেঁটে আসতে কষ্ট হলেও নিরুপায় হয়ে আসছেন বলে জানান। করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণরোধে সরকারঘোষিত সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের আজ দ্বিতীয় দিন চলছে। এ লকডাউনে রেবুর মতো নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি বেড়েছে।

নীলক্ষেত মোড়ে এক বৃদ্ধ রিকশাচালক আবদুস সালাম বলেন, কাকডাকা ভোরে বাসা থেকে বের হলেও মাত্র একজন যাত্রী নিয়ে ধনিয়া থেকে এসেছেন। বৃষ্টিতে ভিজে আধাঘণ্টা যাবত যাত্রীর অপেক্ষা করছেন।তিনি বলেন, একে তো মার্কেটসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ তারওপর বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় মানুষ নেই। তাছাড়া কঠোর লকডাউনের কারণে মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না। সরকার রিকশা চলাচলের অনুমতি দিলেও মানুষ রাস্তায় বের হতে না পারলে তাদের রোজগার কেমনে হবে বলে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন।

লকডাউনের দ্বিতীয় দিন আজ (২ জুলাই) এ প্রতিবেদক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খুবই স্বল্প সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখতে পান। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে রিকশাচালকদের অপেক্ষা করতে দেখা গেলেও সে তুলনায় যাত্রী ছিল না বললেই চলে। নিম্ন আয়ের মানুষ যারা বাসে চলাচল করেন রিকশায় বেশি ভাড়া হাঁকার কারণে তাদের পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ে শুক্রবার ছু্টির দিন কারওয়ান বাজারে প্রাইভেটকার, রিকশা, মোটরসাইকেল ও ভ্যানগাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন ও মানুষের ভিড়ে জমজমাট থাকলেও লকডাউন ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে আজ সেখানে ভিন্ন চিত্র।

তরকারি, শাকসবজি ও ফলমূলের বাজার অনেকটা ফাঁকা। একজন কাঁচকলা বিক্রেতা জানান, সকাল ৭টার মধ্যে তার কলা বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও লকডাউনের কারণে অনেক কলা থেকে গেছে। আজ আদৌ বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

Related posts

ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ 

News Desk

১২ জেলায় নতুন ডিসি

News Desk

সড়কে কর্মরতদের ২৫% কানে কম শোনেন

News Desk

Leave a Comment