Image default
বাংলাদেশ

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ৬৩ লাখ গ্রাহক উধাও

দেশের যে কোনো প্রান্তে সহজে টাকা পাঠানোর জনপ্রিয় মাধ্যম মোবাইল ব্যাংকিং। দেশে এ সেবা চালুর পর থেকে ক্রমাগতভাবে বাড়ছে গ্রাহক। তবে গত এপ্রিলে আগের মাসের চেয়ে এ খাতের নিবন্ধিত গ্রাহক কমে যায় ৬৩ লাখ ২০ হাজার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) এপ্রিল মাসের হালনাগাদ পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, দেশে অনুমোদিত ১৫টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। এপ্রিল মাস শেষে এসব প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার। এর আগের মাস মার্চে যা ছিল ১০ কোটি ২৭ লাখ ৯৬ হাজার। এ হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে এমএফএস সেবায় নিবন্ধিত গ্রাহক কমেছে ৬৩ লাখ ২০ হাজার।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ নিবন্ধিত গ্রাহক কমে যাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তথ্য সংগ্রহ করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিওরক্যাশের সেবা বন্ধ হওয়ার কারণে কয়েকটি ব্যাংকের গ্রাহক কমেছে। এছাড়া ইউক্যাশ বন্ধ করে নতুন সেবা ‘উপায়’ চালু করা হয়েছে। ইউক্যাশের যেসব গ্রাহক উপায়-এ স্থানান্তর করা হয়েছে তাদের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। এসব কারণে নিবন্ধিত গ্রাহক কমতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের এমএফএস সেবা ‘ইউক্যাশ’ ছিল। তারা এটি বন্ধ করে ‘উপায়’ নামে নতুন সেবা চালু করেছে। ‘ইউক্যাশ’ থেকে ‘উপায়’ এ যে গ্রাহক তারা নিয়েছে ওই ডাটাগুলো সংযুক্ত করেনি। তাই গ্রাহক কম দেখাচ্ছে। এটি যুক্ত করা হলে আবার গ্রাহক বাড়বে।

এমএফএসের নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন ক‌রে‌নি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করা হয়।

সবশেষ তথ্য বলছে, এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা কমলেও সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা বেড়েছে। আলোচিত সময়ে এমএফএস সক্রিয় গ্রাহক এক মাসের ব্যবধানে ৬ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬৭ লাখ ৪৯ হাজারে। এ সময় মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০। এদিকে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে লেনদেনও বেড়েছে। এমএফএসে এপ্রিল মাসে লেনদেন হয়েছে ৬৩ হাজার ৪৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। দিনপ্রতি যার গড় প্রায় দুই হাজার ১১৬ কোটি টাকা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব হিসাবে ডাক বিভাগের মোবাইলে আর্থিক সেবা ‘নগদ’ এর তথ্য নেই।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। যেমন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক থেকে মোবাইলে ও মোবাইল থেকে ব্যাংকেও লেনদেন করার সুবিধা পাচ্ছেন গ্রাহক।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে এমএফএসে রেমিট্যান্স সংগ্রহ প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১২ কোটি টাকা। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ১৯ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৯৬২ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ হ‌য়ে‌ছে ২ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা।

Related posts

লকডাউনের প্রথম দিনে রাস্তায়-রাস্তায় চেকপোস্ট

News Desk

স্বাস্থ্যবিধি পেছনে ফেলে ঈদে বাড়ি ছুটছে মানুষ

News Desk

স্কুলের জায়গা দখল করে ‘বইহীন’ পাঠাগার, চলে দলীয় অনুষ্ঠান

News Desk

Leave a Comment