Image default
বাংলাদেশ

বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সেই তামান্না 

জন্ম থেকে দুই হাত ও এক পা না থাকা যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার অদম্য মেধাবী তামান্না আক্তার নুরা গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

গত ৩০ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তামান্না। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকালে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ওয়েবসাইটে গুচ্ছের ‘ক’ ইউনিটের ফল প্রকাশ হয়। প্রকাশিত ফলাফলে তামান্নার মার্কস এসেছে ৪৮ দশমিক ২৫। পরীক্ষায় ‘প্রতিবন্ধী কোটা’ ব্যবহার করার সুযোগ থাকলেও তা নেননি। তার বাবা রওশন আলী ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান তামান্না। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। ছোট বোন মুমতাহিনা রশ্মি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ভাই মুহিবুল্লা তাজ প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। 

আরও পড়ুন: সেই তামান্নাকে ফোন দিলেন প্রধানমন্ত্রী, বললেন ‘তুমি কাঁদছো কেন’ 

রওশন আলী জানান, প্রাথমিক ফলাফলে তিনি খুশি। তামান্না পছন্দের বিষয়ে পড়তে পারবেন বলে আশা করা যায়। যবিপ্রবিতে ভর্তির সুযোগ পেলে তাদের জন্য ভালো। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ল্যাব ও বিভিন্ন ব্যবহারিকের জন্য নানা ভবনে যাওয়া-আসার জন্যে আধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন তামান্নার পড়াশোনার ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। তিনি সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’

তামান্নার বাবা বলেন, ‘আমি নন-এমপিও দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক। টিউশনি করে সংসার চালাই। অন্য সন্তানদের পড়াশোনা, সংসার খরচ বহন করে তামান্নার বাইরে পড়াশোনা করানো কষ্টসাধ্য। এছাড়া তামান্নার সঙ্গে আমাদের থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে অন্য জেলায় গিয়ে তার লেখাপড়ার খরচ বহন করা সম্ভব হবে না। তাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাওয়ায় আমরা খুশি।’

যবিপ্রবির সহকারী পরিচালক (গণসংযোগ) আব্দুর রশিদ বলেন, ‘প্রতিবন্ধী কোটায় তামান্নার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ নেননি। নিজের মেধার জোরে পড়াশোনা করতে চান। তার জন্য শুভ কামনা।’

২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর তামান্নার জন্ম। ঝিকরগাছার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। বাঁ পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। একইভাবে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। দুই হাত ও এক পা নেই তার। শুধু বাঁ পা নিয়ে জন্ম নেওয়া তামান্না প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছেন। 

এসএসসির ফলাফলের পর এই অদম্য মেধাবী তরুণীকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর এইচএসসিতেও একই ফল হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহেনা খোঁজ-খবর নেন। কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও। 

আরও পড়ুন—

পায়ের আঙুল দিয়ে লিখে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন তামান্না

‘স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফিরেছি’

Source link

Related posts

১১ আগস্ট থেকে চলবে ট্রেন

News Desk

দলীয় সিদ্ধান্তের আগেই ভোটের মাঠে বিএনপির সাবেক এমপি

News Desk

শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

News Desk

Leave a Comment