সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের প্রেমিকা ভারতীয় নাগরিক গায়ত্রী অমর সিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনএইচসিআর) চিঠি দিয়েছে মিতু হত্যামামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মঙ্গলবার (২৫ মে) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা চিঠি দেওয়ার বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন। ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বরাবর চিঠিটি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। চিঠির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার এজাহারে গায়ত্রী অমর সিংয়ের নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া মামলা দায়ের শেষে মামলার বাদী মিতুর পিতা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, গায়ত্রীর মোবাইল থেকে মিতুকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআই কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, এজাহারে এমন তথ্য উল্লেখ নেই। এজাহারের বাইরে কোন বিষয়ে এখনো মামলার বাদীর সাথে কথা বলিনি আমরা।
তবে এজাহারে উল্লেখ থাকা বাবুল আকতারকে গায়ত্রীর উপহার দেওয়া দুটো বই ফরেনসিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বই দুটি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানোর জন্য শিগগিরই আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে পিবিআই সূত্রে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সড়কে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদফতরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন বাবুল। তবে পুলিশ তদন্তে তার সম্পৃক্ততার গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই। শেষে ৫ বছর পর চলতি বছরের ১২ মে আদালতে বাবুল আকতারের দায়ের করা মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট জমা দেয় পিবিআই।
একই দিন বেলা দুইটার দিকে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে মিতু হত্যার ঘটনায় নতুন আরেকটি মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। মামলা দায়েরের পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি জানান, মিতুকে হত্যার আগে গায়ত্রীর মুঠোফোন থেকে মিতুকে এসএমএস করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
তবে নতুন মামলায় গায়ত্রীকে আসামি করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন,‘তিনি হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু এই হত্যা প্রক্রিয়ার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন কি-না তা আমাদের জানা নেই। গায়ত্রীর বিষয়টি এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তদন্ত কর্মকর্তাই আসামি হিসেবে তার নাম যোগ করতে পারবেন।
সূত্র :চট্টগ্রাম প্রতিদিন