Image default
বাংলাদেশ

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত যশ, আঘাত হানতে পারে বুধবার

যশ এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোচ্ছে। ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ভারতের উড়িষ্যার উপকূলের দিকে যাচ্ছে। ঝড়ের কেন্দ্রের কাছে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮৯ কিলোমিটার। যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি আগামীকাল বুধবার অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ভারতের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। যার বেশ প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের খেপুপাড়া, খুলনাসহ আশেপাশের এলাকায়।

এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ এ কে রুহুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত বিশেষ সতর্ক বার্তায় বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এবং এর আশপাশের এলাকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় যশ আরও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

এটি সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে ছিল, আজ মঙ্গলবার সকালে তা এগিয়ে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। একইভাবে কক্সবাজার থেকে গতকাল সন্ধ্যায় ছিল ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, এখন তা আরও এগিয়ে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। মোংলা বন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার থেকে এগিয়ে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার থেকে এগিয়ে ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।

অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং ২৬ মে ভোর নাগাদ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছাতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮৯ কিলোমিটার। এই গতিবেগ দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছের সাগর বিক্ষুব্ধ অবস্থায় আছে। দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ করতে না করা হয়েছে।

এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ঘণ্টায় প্রায় ১০ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসারের দিকে যাচ্ছে। ঝড়টি গতকাল সন্ধ্যায় ভারতের আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থান করছিল। এখন তা সরে গিয়ে উড়িষ্যার দিকে যাচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যায় উড়িষ্যার প্যারাদ্বীপ থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে ছিল, এখন তা আরও এগিয়ে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে।

একইভাবে বালাসোর থেকে ছিল ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে, এখন আছে ৪৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব দীঘা থেকে ছিল ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে, এখন অবস্থান করছে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণে।

এছাড়া বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে।

তারা বলছে, প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, আরও তীব্রতর হয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এটি উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। আরও তীব্র আকার ধারণ করে উত্তর উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের নিকটবর্তী উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে। আগামীকাল ২৬ মে বুধবার ভোরে চাঁদবালি-ধামড়া বন্দরের খুব কাছে চলে যাবে। এটা বুধবার দুপুরে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উত্তর উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ, প্যারাদ্বীপ এবং বালাসোরসহ সাগরের আশেপাশের দ্বীপের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর।

Related posts

খেলনা ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণে শিশু নিহত

News Desk

সূর্যমুখীর হাসি দর্শনার্থীদের মুখে

News Desk

৩ দিনেও বন্যাদুর্গতদের সংখ্যা জানতে পারেনি জেলা প্রশাসন

News Desk

Leave a Comment