Image default
বাংলাদেশ

তেহরানকে রাজি করালো ঢাকা, আইওরা’র ডায়ালগ পার্টনার সৌদি

সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে বিরোধ অনেক পুরোনো। সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সংস্থাতেও পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে। ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওরা) পূর্ণ সদস্য হচ্ছে ইরান। সৌদি আরবের ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার আগ্রহতে অনেক দিন ধরেই বাদ সাধছিল তেহরান। অবশেষে ইরানকে এই বিষয়ে রাজি করাতে পেরেছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইওরা’র মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সৌদি আরব ডায়ালগ পার্টনার হবে। এর পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়েছে, চেয়ার দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ বাকি দুই দেশকে নিয়ে শিগগিরই একটি বৈঠকে অংশগ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব মো. খোরশেদ আলম বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তারা ডায়ালগ পার্টনার হবে। তবে একটি কিন্তু আছে, সেটাও আমরা এটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেরে ফেলবো।’

উল্লেখ্য, আইওরার ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার জন্য ২০১৯ সালে আবেদন করে সৌদি আরব। ওই আঞ্চলিক জোটের পূর্ণ সদস্য হচ্ছে ইরান এবং তাদের বিরোধিতার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে সফল হয়নি সেই প্রচেষ্টা। ২০২১-এর নভেম্বরে বাংলাদেশ আইওরার চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং বিষয়টি নিয়ে ইরানের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলোচনা করে। এর ফলশ্রুতিতে সর্বশেষ আইওরা বৈঠকে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়।

ইরানের শর্ত

খোরশেদ আলম সংবাদ সম্মেলনে ‘কিন্তু’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন এবং সেটি হচ্ছে ইরানের একটি শর্ত। শর্তটি হচ্ছে চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করবে এবং সেখানে বাংলাদেশের উপস্থিতিতে ইরান ও সৌদি আরব আলোচনা করবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, ইরানকে রাজি করাতে চেয়ার হিসাবে বাংলাদেশকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। আইওরা মূলত একটি অর্থনৈতিক জোট, যেখানে সমুদ্র সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের দুটি দেশের মধ্যে বিরোধ মীমাংসার সক্ষমতা থাকে না, যেটি জাতিসংঘের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আছে। কিন্তু বাংলাদেশ উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে দুই দেশের মধ্যে সদস্য সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসা করা যায়।

কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং কখন বৈঠকটি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা সেটি আমরা দুপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবো। এছাড়া বৈঠকটি আমরা দ্রুত করতে চাইছি।’

কোন স্তরে এই আলোচনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি একটি জোটের সদস্য হওয়া সংক্রান্ত বিষয়। এক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ইরান ও সৌদি আরব যত উচ্চ পর্যায়ে এই বৈঠক করতে চাইবে, বাংলাদেশের প্রতিনিধিও তত উচ্চ পর্যায়ের হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সবসময় একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। আমরা কারও সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ি না এবং আমাদের সীমিত সক্ষমতায় বিরোধ নিরসনে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করি। সৌদি আরব ও ইরানের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি ঘটেছে।’

ইরান ও সৌদি আরবসহ সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক আছে। ফলে সবার সঙ্গে আলোচনায় কোনও সমস্যা হয় না বাংলাদেশের বলে তিনি জানান।

Related posts

সীতাকুণ্ডে কনটেইনার বিস্ফোরণ: এক মাসেও অগ্রগতি নেই মামলার

News Desk

পদ্মায় ধীরগতিতে চলছে ফেরি

News Desk

নামসর্বস্ব খামার দেখিয়ে পৌনে ১৫ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ

News Desk

Leave a Comment