Image default
বাংলাদেশ

টিকার তথ্য চেয়ে রাশিয়া ও চীনকে চিঠি

চীন ও রাশিয়া থেকে করোনা-ভাইরাসের ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। দেশ দুটির উৎপাদিত ভ্যাকসিনের তথ্য চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা, সংরক্ষণের পদ্ধতি, প্রয়োগ পদ্ধতিসহ ৭/৮টি বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের নতুন চালান অনিশ্চয়তায় পড়ায় বিকল্প হিসেবে চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দ্রুততম সময়ে ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে দেশ দুটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ চীন থেকে সরাসরি ভ্যাকসিন ক্রয় করবে এবং রাশিয়া থেকে ভ্যাকসিন উৎপাদনের ফর্মুলা নিয়ে তা দেশেই উৎপাদন করা হবে। ভ্যাকসিন ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তার বিষয়ে চীন ও রাশিয়া রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।

গতকাল তিনি মানবজমিনকে বলেন, চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে বাংলাদেশ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যোগাযোগের কাজটি করে দিয়েছে। এখন ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়াটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সম্পন্ন করতে হবে। বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন ইস্যুতে সহায়তা দেয়ার বিষয়ে চীন ও রাশিয়া উভয়ই রাজি হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, চীন ও রাশিয়া থেকে ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন ব্যবহারের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন থাকলেও ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা জানার প্রয়োজন আছে। তাছাড়া ভ্যাকসিন আমদানি ও উৎপাদনের জন্য যে কারিগরী সুবিধা লাগে তা নিশ্চিত করতে সময়ের প্রয়োজন। চায়না সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন উৎপাদিত ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও এর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের জন্য চীনকে চিঠি দেয়া হয়েছে। একইভাবে রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিনের বিষয়ে জানতেও তাদের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সচিব পর্যায়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব অংশ নেবেন। এই বৈঠকে চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন আনার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে। ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় সেখানকার সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে চীন ও রাশিয়ার টিকা ব্যবহারের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন চীনের নেতৃত্বাধীন ভ্যাকসিন প্ল্যাটফরমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিষয়টি প্রকাশ করেন। ‘ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড ফর সাউথ এশিয়া’ নামক এই প্ল্যাটফরমে আরো রয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত নভেম্বরে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে সরকার। দেড় কোটি ডোজের অগ্রিম টাকাও পরিশোধ করা হয়।

কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে করে সংকটে পড়ে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন কার্যক্রম সীমিত করা হয়। ভারত থেকে দুই দফায় আসা প্রায় এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের ৮২ লাখ ডোজ ইতিমধ্যেই ফুরিয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে একই সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ প্রদানের কার্যক্রম বন্ধ করে শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। সম্প্রতি সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, আগামী জুন-জুলাইয়ের আগে তারা টিকা রপ্তানি করতে পারবে না।

Related posts

দিনাজপুরে দুইটি প্রাইভেট কার ৩৪ কেজি গাঁজাসহ আটক

News Desk

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড, আধাঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে

News Desk

পাঁচ ভাইকে চাপা দেওয়া পিকআপ চালক ৩ দিনের রিমান্ডে

News Desk

Leave a Comment