Image default
বাংলাদেশ

ছবি নিয়ে নিখোঁজদের সন্ধানে হাসপাতালে স্বজনরা 

সীতাকুণ্ডের বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে নিখোঁজদের খুঁজতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে ভিড় জমিয়েছেন স্বজনরা। বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৪১ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে মাত্র ১৭ জনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে।  

নিহতদের লাশ শনাক্তে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে বলে জানিয়ে পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো. মনির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রযুক্তির সহায়তায় লাশগুলোর পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ১৭ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। যাদের আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাদের ডিএনএ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে শনাক্ত করা হবে।’ 

এদিকে নিখোঁজদের সন্ধানে অনেক স্বজন রাত থেকে খোঁজাখুঁজি করছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে। স্বজনরা মর্গে গিয়ে নিহতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু স্বজনদের খোঁজ পাননি তারা। ছবি নিয়ে নিখোঁজদের সন্ধানে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াতে ,দেখা গেছে অনেককে।  স্বেচ্ছাসেবক, হাসপাতাল কর্মীদের ঘিরে স্বজনের ছবি দেখিয়ে নিখোঁজদের খুঁজছেন তারা। 

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কথা হয় মো. আলীর সঙ্গে। তিনি বোন জামাই মনির হোসেনকে (৩০) খুঁজতে হাসপাতালে এসেছেন। আলী বলেন, আমার বোন জামাই বিএম কনটেইনার ডিপোতে অপারেটরের কাজ করতেন। ছোট বোন রহিমার সঙ্গে পাঁচ মাস আগে বিয়ে হয় মনিরের। তার বাড়ি সীতাকুণ্ড থানাধীন কালুশাহ মাজার গেট এলাকায়। 

হাসপাতালে ছোটভাইকে খুঁজতে এসেছেন আবদুল হান্নান। তিনি বলেন, আমার ভাই মো. সাকিব (১৮) কাভার্ডভ্যানের হেলপার ছিল। ঘটনার পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সবকটি হাসপাতালে খোঁজ-খবর নিয়েছি। কোথাও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। সাকিব নোয়াখালী জেলার সুবর্নচর এলাকার মৃত শফিউল আলমের ছেলে। সাত মাস আগে চাকরিতে যোগ দান করেন সাকিব। 

আবদুল হান্নান জানান, রাত সাড়ে ১০টায় সর্বশেষ সাকিবের সঙ্গে কথা হয়। সে বলেছিল ডিপোতে আগুন লেগেছে। আমরা ডিপোর ভেতরই আছি। ফোন কেটে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার আমি তাকে মোবাইলফোনে কল দিয়েছি। তবে ফোন গেলেও কেউ ধরেনি। তার কাভার্ডভ্যানের চালক আলী আহমেদ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। 

 এদিকে গাউসিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবক মিজানুর রহমান হাসপাতালে পাসপোর্ট সাইজের একটি ছবি হাতে বিভিন্ন জনকে দেখিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, ছবিটি একটি লাশের পকেটে পাওয়া গেছে। ছবির লোকটি মারা গেছেন। তার স্বজনদের খোঁজার চেষ্টা করছি। 

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো ডিপো এলাকা। পরে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে আমদানি-রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনার ছিল। ডিপোর কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল, বিকট শব্দে সেগুলোতেও বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত হয়েছে বেশি। আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে আগুন নেভাতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিটের সদস্যরা পরবর্তীতে অন্য কনটেইনারের বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ডিপোর আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের ২৯টির বেশি ইউনিট কাজ করছে।   

Source link

Related posts

সাঘাটায় বাঙ্গালী নদীর পুনঃখনন কাজ শুরু

News Desk

নারায়ণগঞ্জে বিএনপির জেলা আহ্বায়কসহ ৫ নেতা আটক

News Desk

পেঁয়াজের কেজিতে ৪ টাকা লোকসান কৃষকের

News Desk

Leave a Comment