Image default
বাংলাদেশ

কারখানায় পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু, বিক্ষোভ-ভাঙচুর

গাজীপুরে কারখানায় কর্মরত অবস্থায় এক শ্রমিকের মৃত্যুর পেছনে কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি একই মালিকানাধীন দুটি কারখানায় ভাঙচুর চালায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাওয়া তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। রবিবার (১৯ জুন) মহানগরীর বাসন থানার যোগীতলা এলাকায় অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

কর্মরত অবস্থায় মারা যাওয়া ওই পোশাক শ্রমিকের নাম শাহ আলম (৩৩)। তিনি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুসুল্লিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড পোশাক কারখানায় ফিনিশিং সেকশনে আয়রনম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।  

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, সহকর্মী শাহ আলম সকালে কারখানায় কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তিনি ওই কারখানার মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য যান। কর্তব্যরত নার্স মিতু আক্তার তখন মেডিক্যাল থেকে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর শাহ আলম আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাকে আবারও ওই নার্সের কাছে নিয়ে যান। এ সময় নার্স মিতু আক্তার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে জানান শাহ আলম স্ট্রোক করেছেন। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই শাহ আলম নিস্তেজ হয়ে পড়েন। 

শাহ আলম মহানগরীর যোগীতলা এলাকায় জনৈক আফাজের বাড়িতে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় চাকরি করতেন। 

শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, অসুস্থ শাহ আলমকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে গাড়ি চাইলে কারখানা কর্তৃপক্ষ অনীহা প্রকাশ করে। পরে শ্রমিকেরা অটোরিকশায় করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ দ্রুত তার লাশ ময়মনসিংহে তার গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ শাহ আলমকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়নি বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকেরা।

বাসন থানার ওসি মালেক খসরু খান বলেন, সহকর্মী শাহ আলমের মৃত্যুর খবর কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠেন। এ সময় তারা শাহ আলমের মৃত্যুর জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করে বিক্ষোভ শুরু করেন। উত্তেজিত শ্রমিকেরা ওই কারখানাসহ একই মালিকের পার্শ্ববর্তী টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানার গেট ও দরজা জানালার কাঁচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এ সময় শ্রমিকেরা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা বাইপাস সড়ক অবরোধের চেষ্টা চালালে পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। এতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর এনামুল হকসহ তিন জন আহত হন। আহত ইন্সপেক্টর এনামুল হককে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, স্ট্রোক করে পোশাক শ্রমিক শাহ আলম মারা গেছেন বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ নিহতের ভাইয়ের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

Source link

Related posts

বেপরোয়া গতি, ১৭ মাসে ঝরেছে ১৬২ প্রাণ

News Desk

এক দিনে করোনায় আরও ৪৪ মৃত্যু, শনাক্ত ২৩২২

News Desk

এবার আগেভাগেই শুরু হচ্ছে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ

News Desk

Leave a Comment