Image default
বাংলাদেশ

ঈদে মৌলভীবাজারের শতাধিক রিসোর্ট আগাম বুকিং

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত মৌলভীবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। জেলার শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট আগাম বুকিং দিয়েছেন পর্যটকরা। করোনার সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর পর্যটকশূন্য ছিল। এবার ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় জেলার দর্শনীয় স্থানে অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক বেড়াতে আসবেন বলে আশাবাদী পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

জেলায় পর্যটকদের আকর্ষণীয় কেন্দ্রগুলো হলো শ্রীমঙ্গলের উঁচু-নিচু পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের গালিচায় মোড়ানো চা-বাগান, খাসিয়া পুঞ্জি, মণিপুরী ও ত্রিপুরাদের গ্রাম, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, বাইক্কা বিল হাইল, বধ্যভূমি ৭১, নিমাই শিববাড়ি, শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফিনলে চা বাগানের ভেতরে ডিনস্টন সিমেট্রি, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, ধলই বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, রাজকান্দি বন খাসিয়াপল্লি, হাম হাম জলপ্রপাত ও কলাবন।

বড়লেখায় মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও হাকালুকি হাওর। রাজনগর উপজেলার কমলারাণীর সাগরদীঘি, কাউয়াদীঘি হাওর ও জলের গ্রাম অন্তেহরী। সদরের ৫০০ বছরের প্রাচীন স্থাপত্যের গয়ঘর খোজার মসজিদ, অজ্ঞান ঠাকুরের দেউল ও বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক। জুড়ী উপজেলায় কমলার বাগানসহ লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন। কুলাউড়ার গগন টিলা ও কালাপাহাড়। এছাড়া জেলার নানা নৈসর্গিক সৌন্দর্য ঘিরে পর্যটকদের আকর্ষণ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, শ্রীমঙ্গল রাধানগর গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, চা বোর্ডের টি রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়ামসহ অন্তত শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফাইভ স্টার হোটেলসহ ৭০টি হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। ঈদের টানা ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুদের আগমনে ভালো ব্যবসার প্রত্যাশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

লাউয়াছড়া উদ্যানের ফটকের ভ্যারাইটিজ স্টোরের মালিক দেলোয়ার মিয়া বলেন, ‘এবার ঈদে ব্যবসা ভালো হবে। ছোটবড় হোটেল-রিসোর্টগুলোর বুকিং শেষ। কোনও রিসোর্ট খালি নেই। পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন।’

শ্রীমঙ্গল টি রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়ামের ম্যানেজার শামসুদোহা বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে এবার প্রচুর পর্যটক এখানে আসবেন। তাদের সেবা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অতিথির জন্য রিসোর্টগুলো সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। ৭ মে পর্যন্ত সব রুম বুকিং সম্পন্ন হয়েছে আমাদের।’

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সিনিয়র ট্যুর গাইড সৈয়দ রিজভী ও সোলেমান আসিফ জানান, এবার রমজান মাসে এখানে কোনও পর্যটক ছিল না। আশা করছি, ঈদের ছুটিতে বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যটক আসবেন।

টি রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়াম

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজী সামছুল হক বলেন, ‘এবার ঈদে ছুটি বেশি। আশা করছি, ব্যবসা ভালো হবে। অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট বুকিং হয়ে গেছে।’

একই কথা জানালেন বালিশিরা রিসোর্টের চেয়ারম্যান শহিদুল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদের রিসোর্টের বুকিং প্রায় শেষ। এখন আর বুকিং নেওয়া হচ্ছে না।’

শ্রীমঙ্গলের ফাইভ স্টার হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফের মহাব্যবস্থাপক আরমান খান বলেন, ‘আমাদের বুকিং শেষ। ৪ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত চাপ বেশি থাকবে। এরই মধ্যে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন।’

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সড়কের দুই পাশে চা বাগান

ট্যুরিস্ট পুলিশ মৌলভীবাজার জোনের পরিদর্শক আতিকুর রহমান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বাড়তি নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে টহল জোরদার রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের। বিশেষ করে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ টিম পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে টহল জোরদার রেখেছে। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।’

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে। ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ বাহিনী। ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার কমতি থাকবে না।’

Source link

Related posts

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশ

News Desk

আজ বাংলার বিশেষ লোকজ উৎসব চৈত্রসংক্রান্তি

News Desk

তেলের জন্য হাহাকার ও মাথাপিছু আয়ের ঘুমপাড়ানি গান

News Desk

Leave a Comment