ঘরে বসেই অনলাইনে ভূমি মামলার শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন দেশের নাগরিকরা। দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। বুধবার (৯ জুন) সচিবালয়ে ভূমি সংক্রান্ত মামলার অনলাইন শুনানি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক ও টেকসই ভূমি রাজস্ব বিষয়ক বিচারিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই ভূমি সংক্রান্ত আদালতগুলোর বিচারিক কাজে সরকার অনলাইন শুনানি চালু করেছে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয়ের জন্য এটি একটি মাইলফলক। ডিজিটাইজ ওয়ার্ল্ডে ভূমি মন্ত্রণালয় আর পিছিয়ে নেই। মানুষের হয়রানি কমানো, ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি সময় সাশ্রয় নিশ্চিত করা যাবে। ভূমির খাজনা আদায়ের প্রক্রিয়াটিও অনলাইনে নিয়ে আসা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভূমি কর বা খাজনা পরিশোধে নিবন্ধন করতে নাগরিকদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। আগামী জুলাইয়ে আমরা এটার উদ্বোধন করব। আশা করি, ওই আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিগগিরই কল সেন্টারে ফোন দিয়েও এ সেবা নিশ্চিত করা হবে। ভূমি সেবা জনগণের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতে কাজ করছি। শুনানিতে যেন সঠিক লোক অংশ নেয়, সেই সতর্কতাও নেয়া হয়েছে বলে জানান সচিব। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সারাদেশে সহকারি কমিশনার (ভূমি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সেটেলমেন্ট অফিস, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও ভূমি আপিল বোর্ডে ভূমি রাজস্ব বিষয়ক বিচারিক আদালতের কাজ চলমান রয়েছে। এ সব ভূমি রাজস্ব বিষয়ক আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে অনলাইন শুনানি চালু করা হলে বিচারিক সেবা আরও সহজে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাবে।
অনলাইনে শুনানির বিষয়ে সোমবার ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ অনুযায়ী দেশের সকল ভূমি রাজস্ব বিষয়ক আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে অনলাইন শুনানি নিশ্চিত করতে হবে। এই সেবা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান – এই তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া অবশিষ্ট ৬১ জেলায় শুরু হচ্ছে। মূলত নামজারি, জমাভাগ, বিবিধ মামলা, মিসকেস, সেটেলমেন্ট, রেকর্ড সংশোধন, আপত্তি ও আপিল বিষয়ক মামলাগুলো এই সেবার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ভূমি সংক্রান্ত মামলার অনলাইন শুনানির জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (www.minland.gov.bd) যেতে হবে। সেখানে একজন নাগরিক তার তথ্য দিয়ে অনলাইন শুনানির অনুরোধ জানাতে পারবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ, মোবাইল ও ইমেল অ্যাড্রেস দিয়ে অনুরোধ জানানোর পর মোবাইল ফোনে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে। এরপর নাগরিকরা তার মামলার বিস্তারিত দেখতে পারবেন। সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়েই শুনানির অনুরোধ জানাবেন তারা। শুনানির আবেদন গ্রহণ হলে তা মেইলে আবেদনকারীকে জানানো হবে। শুনানির দিন একটি জুম লিংক দেয়া হবে। সেই লিংকে ক্লিক করেই আবেদনকারী অনলাইন শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।